বয়স ৬০ বছর হলে পেনশন পাবেন নাগরিকরা


hadayet প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৫, ২০২৩, ৪:১০ পূর্বাহ্ন / ৩৭
বয়স ৬০ বছর হলে পেনশন পাবেন নাগরিকরা

দেশের সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ সংসদে পাস হয়েছে। এতে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকের নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পূর্তির পর আজীবন (৭৫ বছর পর্যন্ত) পেনশন সুবিধা ভোগ করার বিধান রাখা হয়েছে। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বরাও পেনশনের আওতায় আসতে পারবেন।

গতকাল মঙ্গলবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। তবে কয়েকটি সংশোধনী গৃহীত হয়। এর আগে সরাসরি সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বিলটি পাস না করে ফেরত পাঠানো বা জনমত যাচাই বা বাছাই কমিটিতে প্রেরণের পক্ষে দেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম, মুজিবুল হক চুন্নু, পীর ফজলুর রহমান ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু।

পেনশন আইনে বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জীভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্বরাও এই আইনের আওতায় নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা পরিশোধ করে পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সেই বয়স থেকে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন। আজীবন বলতে পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে।

আইনে আরো বলা হয়েছে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকদের অথবা অসচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। তবে পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তাঁর নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তাঁর নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।

আইনে আরো বলা হয়েছে, পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন, যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে।

আইনে পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে এবং পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি অথবা আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারবে। এ ক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা পেনশনব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।