আজ জেলা পর্যায়ে নামছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি


hadayet প্রকাশের সময় : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩, ৪:৪৭ পূর্বাহ্ন / ৪১
আজ জেলা পর্যায়ে নামছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি

কয়েক মাস ধরে রাজনীতির মাঠ দখলে দুই দলের মধ্যে যে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলছে, তার ধারাবাহিকতায় জেলা পর্যায়ে নামছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। আজ শনিবার ভিন্ন দুই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে দুই দল। এদিন বিএনপি পদযাত্রা করবে। আর আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করবে।

এর আগে চলতি মাসে ইউনিয়ন এবং মহানগর পর্যায়ে একই দিন রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল দুই দল। ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও মহানগরের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ।

রাজধানী ও মহানগর কেন্দ্রিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলেও ইউনিয়নের পর জেলা পর্যায়েও দুই দলের নেতাদের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। জেলা পর্যায়ে রাজপথ দখলের লড়াইয়ের মানসিকতায় গত বছরের মাঝামাঝিতে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, প্রাণহানিও হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় নেতারা জেলার কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থাকবেন। আওয়ামী লীগ অবশ্য স্থানীয়ভাবে শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি পালন করবে।

বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের পাল্টা হিসেবে গত বছরের নভেম্বর থেকে আওয়ামী লীগও একই দিন কর্মসূচি পালন করে আসছে। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন থেকে ক্ষমতাসীনরা রাজপথে অবস্থান নেওয়া শুরু করে। তখন থেকেই পাল্টা কর্মসূচি শুরু হয়।

আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, কেন্দ্র থেকে জেলা কমিটিগুলোকে কর্মসূচির বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিছু জেলার ইউনিয়ন পর্যায়েও শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীনরা।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজশাহীর প্রতিটি ইউনিয়নে শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হবে। সে প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতারা ভাগ হয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

আজ গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় জনসভায় অংশ নেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ কারণে আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা কোটালিপাড়ার কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন। তাই মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হবে না।

ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ করবে। বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো বাধা দেবে না। তবে বিএনপির কর্মসূচি থেকে যেন কোনো সহিংসতা চালাতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে আমাদের নেতাকর্মীরা।’

দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে আজ শান্তি সমাবেশ করবে যুবলীগও। গতকাল সংগঠনের পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার দেশের প্রতিটি উপজেলা, থানা, পৌরসভায় যুবলীগের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে শান্তি সমাবেশ করবে যুবলীগ।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দপ্তর বিভাগ থেকে জেলা নেতাদের কাছে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। দল থেকে ৬৭ সাংগঠনিক জেলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জে কর্মসূচি রবিবার হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ কেরানীগঞ্জ হয়ে গোপালগঞ্জে যাবেন, সে কারণে প্রশাসনের অনুরোধে বিএনপি কর্মসূচি স্থগিত করেছে।

জেলা পর্যায়ে সমাবেশে বড় ধরনের শোডাউন করতে কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতি না পেলেও কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করতে বলা হয়েছে। কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হলে ওই জেলা কমিটিকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে বলে জানান দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

জেলার পর আগামী ৪ মার্চ এবার মহানগরের থানা পর্যায়ে সমাবেশ করবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। বিএনপির সঙ্গে সমমনা দলগুলোর লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারবিরোধী আন্দোলন দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। জেলা পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এই আন্দোলনে নতুন মাত্রা দেওয়া হবে।

রাজধানীতে শনিবার সমমনা জোটগুলোর কোনো পদযাত্রা কর্মসূচি নেই। সমমনা জোটের নেতারা জানান, শনিবার (আজ) রাজধানীতে পদযাত্রার বিষয়ে পুলিশের অনুমতি তাঁরা পাননি। তবে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে তাঁদের কর্মসূচি হবে।

বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিলসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে এই পদযাত্রা করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।

এদিকে বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও  এলডিপির সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে বিশ্বাস নিয়ে আমরা ঐক্য করেছি, যে বিশ্বাস নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, সেই বিশ্বাসে আমরা সবাই অটুট আছি। সেই বিশ্বাস নিয়ে আমরা আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’