গত ৮ আগস্ট রাত সাড়ে ১২টার দিকে জসিমের বাসায় যায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোর্ট থানার পুলিশ। সে সময় ঘুমিয়ে ছিলেন ১৬ বছর বয়সী জসিম। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাদক মামলার ওয়ারেন্ট আছে বলে তাকে ধরে থানায় নেয়া হয়।
ভুক্তভোগী জসিম বলেন, ওয়ারেন্টের কাগজটা আমার আব্বুকে দেখাইছে, আমার আব্বু তো পড়ালেখা তেমন জানে না; তাই সে এটা তেমন বুঝতে পারেনি। পরে আমার হাতে হাতকড়া লাগিয়ে আমাকে গাড়িতে উঠিয়েছে। পরে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আমাকে কেন গ্রেফতার করা হয়েছে, আমার অপরাধ কী? তখন আমাকে বলা হয়েছে তোমার নামে ওয়ারেন্ট আছে, তোমার নামে মামলা আছে।
জসিম কোনো মামলার আসামি নন, বারবার পুলিশের কাছে আকুতি জানান তার মা। কে শোনো কার কথা। মাদকের দুই মামলায় পাঠানো হয় কারাগারে। পরে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত জসিম নিরপরাধ। জামিন নিয়ে পলাতক আসামি সজিবের পরিবর্তে জসিমকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরই মধ্যে ৮দিন জেল খাটে জসিম।
জসিম বলেন, আমার আইনের প্রতি যে বিশ্বাস ছিল সেটা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আর বিশ্বাসটা আমি এখন পুরোপুরিভাবে পেয়েছি। ছেলে যখন জেলে মা তখন ঘুরেছেন দুয়ারে দুয়ারে। অনেক কষ্টে টাকা জোগার করে ছেলেকে মুক্ত করার যুদ্ধে নামেন মা। ঘটনা তুলে ধরা হয় আদালতে। সব শুনে জসিমকে মুক্তি দেন আদালত। একই সঙ্গে নাঙ্গলকোর্ট থানার ওসি এবং গ্রেফতারকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
জসিমের মা বলেন, আমার ছেলেকে মুক্ত করার জন্য আমার জমিজমা বিক্রি করে ফেলেছি। এখন আমার ছেলেকে মুক্ত পেয়েছি। আমার ছেলের সঙ্গে যা হয়েছে এর উপযুক্ত বিচার চাই আমি। আমি অনেক কষ্ট করে এই মামলা চালিয়েছি।
আদালতে একটি ব্যাখ্যা দায়সারা দিয়েছেন নাঙ্গলকোর্ট থানা পুলিশ। তারা বলছেন, শুরুতে পরিবারের কেউ অভিযোগ করলে এমন ঘটনা ঘটত না। বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ভুল এবং সরল বিশ্বাসে করা হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশের এমন সরল ভুলের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ভুক্তভোগী জসিমের পরিবার।
আপনার মতামত লিখুন :