ড্যানিয়েল ক্রেইগ, পিয়ার্স ব্রসনান, রজার মুর, শন কনারি…। নামগুলোর মধ্যে একটা মিল খুঁজে পাচ্ছেন নিশ্চয়ই। সবাই জেমস বন্ডের নায়ক। তাঁদের কাউকে ছাড়া জেমস বন্ড কল্পনা করে দেখুন তো। ঠিক জমছে না, তাই না!
এবার আসুন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে। শহীদ আফ্রিদি, ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল থেকে শুরু করে এখনকার জস বাটলার, কুইন্টন ডি কক, অ্যালেক্স হেলসসহ বিশ্বের আরও যত মারকাটারি ব্যাটসম্যান আছেন, তাঁদের ছাড়া কি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি জমে? বিপিএলের কথাই যদি বলেন, আফ্রিদি–গেইলরা অতীত হয়ে যাওয়ার পর এটা তো একটা উত্তাপহীন টুর্নামেন্টই!
একটু বোধ হয় ভুল বলা হয়ে গেল। সাকিব আল হাসান তো আছেন! বিপিএলের মাঠে আগুনের স্ফুলিঙ্গ ছোটাতে তিনি একাই এক শ। সে জন্য তাঁকে ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করতে হয় না। স্পিন–বিষ খরচ করাটাও নিছকই অপচয়। সাকিব শুধু খেলার মধ্যে ডাগআউট থেকে একবার স্যান্ডেল পায়ে দৌড়ে মাঠে ঢুকবেন অথবা প্রতিপক্ষের কোনো বোলারের বাউন্সারে ওয়াইডের দাবিতে আম্পায়ারের দিকে তেড়েফুঁড়ে যাবেন, সেটাই যথেষ্ট। বিপিএল নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার আগুনে সেই দৌড়, সেই তেড়েফুঁড়ে যাওয়া বাড়তি উত্তাপ ছড়াতে বাধ্য।
গতকালের প্রথম ম্যাচের ঘটনাই ধরুন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রংপুর রাইডার্সের ১৫৮ রানের জবাব দিতে নেমেছেন সাকিবের দল ফরচুন বরিশালের দুই ওপেনার চতুরঙ্গা ডি সিলভা ও এনামুল হক। চতুরঙ্গা ডি সিলভা স্ট্রাইকে, রংপুরের বোলার রকিবুল হাসান বোলিং প্রান্তে। কিন্তু স্ট্রাইকে বাঁহাতি চতুরঙ্গাকে দেখে রংপুর অধিনায়ক নুরুল বোলার বদলে বল তুলে দেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের হাতে।
সেটা দেখে স্ট্রাইকে চলে আসেন অন্য প্রান্তে থাকা বরিশালের আরেক ওপেনার এনামুল। এরপর রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান আরও একবার সিদ্ধান্ত বদলে ডানহাতি এনামুলের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার রকিবুলকে বোলিং দিতে চান।
এটা দেখে ডাগআউট থেকে এক দৌড়ে মাঠে চলে যান সাকিব। প্রথমে তো মনে হলো গ্যালারি থেকে কোনো দর্শকই বুঝি ঢুকে পড়েছেন মাঠে! উইকেটে গিয়ে সাকিব হাত নেড়ে আম্পায়ারদের কী কী যেন বলতে থাকেন। যাঁরাই তাঁকে নিবৃত্ত করতে আসছিলেন, হাত ঝেড়ে ফেলে দিচ্ছিলেন তাঁদের। ক্রিকেট নয়, মাঠে যেন রীতিমতো সার্কাস চলছে। খেলা চলাকালীন মাঠে ঢুকতে হলে আম্পায়ারের অনুমতি নিতে হয়। সাকিব সেটাও নেননি।
বরিশালের ম্যানেজার সাজ্জাদ আহমেদ অবশ্য এর একটা ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী কোন বোলার বল করবেন, তা ঠিক হওয়ার পর ব্যাটসম্যানরা কে স্ট্রাইক নেবেন, তা ঠিক হয়। এ ক্ষেত্রে শেখ মেহেদীকে বল করতে আসতে দেখে চতুরঙ্গা ডি সিলভার বদলে এনামুল হককে স্ট্রাইকে চাচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু আম্পায়ার সেটার অনুমতি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না, এ নিয়ে কথা বলতেই মাঠে প্রবেশ করেন তিনি (সাকিব)।’
আপনার মতামত লিখুন :