বলছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, নাটক সাজিয়েছে বাফুফে


hadayet প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১০, ২০২৩, ৩:২২ পূর্বাহ্ন / ৩৬
বলছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী,  নাটক সাজিয়েছে বাফুফে

নারীদের অলিম্পিক ফুটবলের বাছাই পর্বে অর্থ সংকটের অজুহাতে দল পাঠায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত নাখোশ হয়ে ধমক দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দীনকে। এবার যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল কড়া সমালোচনা করলেন বাফুফের সিদ্ধান্তের।

৬ এপ্রিল মিয়ানমারে শুরু হয়েছে মেয়েদের অলিম্পিক বাছাই পর্বের ‘বি’ গ্রুপের খেলা। কিন্তু ২৯ মার্চ হঠাৎ করে সংবাদ সম্মেলন করে বাফুফে জানায়, অর্থ সংকটের কারণে মিয়ানমারে দল পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

এর দুদিন আগে বাফুফে দল পাঠানোর জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বরাবর টাকা চেয়ে আবেদন করেছিল। এভাবে তাড়াহুড়ো করে টাকা চেয়ে ফের দুদিনের মাথায় দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়াকে ‘নাটক’ বলে অভিহিত করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি নারী ফুটবল দলকে বিদেশে পাঠানোর ইচ্ছাই ছিল না তাদের (বাফুফের)। এই জন্যই এমন নাটক সাজিয়ে তাদের দোষটা আরেকজনের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।’

শেষ মুহূর্তে টাকার জন্য চিঠি দিয়ে তারপর দু’দিনের মাথায় দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে বলে মনে করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। এর পেছনের কারণ খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘নারী ফুটবল দলের অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করার জন্য যে প্রস্তাবনা তারা দিয়েছিলেন, সেখানে আমাদেরও প্রাথমিকভাবে দোষারোপ করা হয়েছে। বলেছেন, সরকার বা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় বরাদ্দ দেয়নি, এ জন্য দল পাঠানো সম্ভব হয়নি। তারা যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন, এ জন্য কখনোই আর্থিক সহযোগিতা এর আগে সেভাবে চায়নি। তারপরও আমরা ২৭ মার্চ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি। কিন্তু সেখানে উল্লেখ ছিল ৩১ মার্চের মধ্যে তাদের অবগত করানোর জন্য, যে তাদের ৯২ লাখ টাকা প্রয়োজন। অথচ একদিন পরই তারা জানালেন যে টাকা পাচ্ছেন না বলে টিম পাঠাতে পারছেন না, কীভাবে এটা হয়?’

বাফুফে যেভাবে গোটা ঘটনাটা ঘটিয়েছে তাতেই সন্দেহ পোষণ করছেন প্রতিমন্ত্রী। শেষ মুহূর্তে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই টাকার অভাব দেখিয়ে  দল না পাঠানোকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করছেন বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতের এই অভিভাবক।

তিনি বলেন, ‘এটা তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করেছে। কেন এত তড়িঘড়ি করে চিঠি দিলেন, কেন তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন সময়ের আগে? এ ধরনের টুর্নামেন্টে অংশ নিতে হলে নিশ্চয় তারা তিন বা ছয় মাস আগে জানতে পেরেছেন। তারা এতদিন পরে জানালেন কেন? তারা যে অলিম্পিক বাছাইয়ে যেতে পারল না, এর মধ্যে কিছু একটা আছে। আমাদের পক্ষ থেকেও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আমি প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানিয়েছি।’

বাফুফের চিঠি পেয়েই স্বল্প সময়ে যে অর্থ সংগ্রহের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তাও জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘যে কোনো সংস্থার কাছে টাকা চাইতে হলে একটু সময় লাগে, সময় দিতে হবে তাদের। আমাদের কাছে টাকা চাওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয়ে এই অর্থ ছাড়ের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে চিঠি লিখেছি। সেটির জবাব আসার আগেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে আমি মনে করি, প্রধানমন্ত্রী, যিনি নারী খেলোয়াড়দের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, তাকেও জানানো যেত।’

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ তো দূরের কথা, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গেও কোনো ধরণের যোগাযোগ করা হয়নি বলে জানান জাহিদ আহসান। তিনি বলেন, ফেডারেশনের সভাপতি (কাজী সালাউদ্দিন) আমাকে ফোন করতে পারতেন। বলতে পারতেন, যে টাকার জন্য আটকে গেলাম, কী করা যায়। কিন্তু উনি কোনো কথা বললেন না। হঠাৎ করে এক দিনের মাথায় সংবাদ সম্মেলন করে খেলা থেকে পিছিয়ে গেলেন। এর জন্য সরকার ও যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে দোষারোপ করা হলো, এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।