বন্যা পরিস্থিতি : এখনো পানিবন্দি ৭ লাখ পরিবার


hadayet প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪, ৩:৫৫ পূর্বাহ্ন /
বন্যা পরিস্থিতি : এখনো পানিবন্দি ৭ লাখ পরিবার

দেশের উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ১১ জেলায় এখনো সাত লাখ পাঁচ হাজার ৫২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫৩ লাখ ছয় হাজার ৪০২। বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। এর মধ্যে পুরুষ ৪১ জন ও মহিলা ছয়জন।  এ ছাড়া এবারের বন্যায় ১২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল রবিবার দুপুর ১টায় বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতিতে এই তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম, ফেনী, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। মৌলভীবাজার জেলার পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে।  এ ছাড়া কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বন্যাদুর্গত জেলাগুলোতে যোগাযোগব্যবস্থাও স্বাভাবিক হয়েছে। এখন আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে তিন লাখ ৫২ হাজার ৯৪২ জন। তিন দিন আগেও প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছিল।

বন্যায় গতকাল নতুন করে মৃতের সংখ্যা বাড়েনি। আগের দিন শনিবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। কালের কণ্ঠ’র নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

ফেনী : এবারের বন্যায় ফেনীতে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি মারা গেছে। ফলে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে অনেকে।

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ছয় উপজেলায় ৩৮ হাজার ৭৩১টি গরু, ১২৯টি মহিষ, ১৫ হাজার ৬০৪টি ছাগল, ৩৫৬টি ভেড়া, এক লাখ ৭৩ হাজার ৮১০টি মুরগি ও এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৭২টি হাঁস মারা গেছে। অসুস্থ হয়ে পড়া ছয় হাজার ১৪৫টি পশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রাথমিকভাবে ৩০২ কোটি ৬৭ লাখ ৯২ হাজার ৩৩০ টাকা ক্ষতি নির্ণয় করা হলেও এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) : উপজেলায় বন্যায় কৃষি ও মৎস্য খাতে অন্তত ১৪ কোটি ৩২ লাখ টাকার সম্পদহানি হয়েছে। কৃষক, কৃষি অফিস ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বন্যায় ফেনী-নোয়াখালীর মতো বাড়িঘর ও অন্যান্য সম্পদহানি ঘটেনি।

উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পানি নামতে শুরু করার পর ফসলি জমি ও মৎস্য খাতগুলোতে ক্ষতির চিত্র ক্রমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মৎস্য খাতে। তবে সরকারি হিসাবের সঙ্গে মাঠের চিত্রে এই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল ও মুরাদপুর ইউনিয়নের গুলিয়াখালী আদর্শ গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে জমির পর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম, ঢেঁড়স, করলা, ঝিঙে ও বরবটির গাছ পচে গেছে। রোপা আমনের বীজতলার চারা মরে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে টমেটোর জন্য তৈরি করা ক্ষেত। তবে পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকরা মাঠ আবার প্রস্তুত করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।