মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের বেশির ভাগই নড়ছেন না


hadayet প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২২, ২০২৪, ৩:১০ পূর্বাহ্ন / ১২
মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়দের বেশির ভাগই নড়ছেন না

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়-স্বজনের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনা থাকলেও এই নির্দেশনা অনেকে মানছেন না। গতকাল রবিবার পর্যন্ত মন্ত্রী-এমপির আত্মীয়-স্বজনের হাতে গোনা দু-একজন ছাড়া বেশির ভাগই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। উল্টো তাঁরা নির্বাচন করা নিয়ে অনড় রয়েছেন। প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন আজ সোমবার।

তবে শেষ দিনে মন্ত্রী-এমপিদের আরো কিছু আত্মীয়-স্বজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গতকাল। সেখানেও মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য খান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধনের বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুত্ফুল হাবিব রুবেল। গতকাল দুপুরে নাটোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল লতিফ শেখের কাছে এসে প্রার্থী লুত্ফুল হাবিব রুবেলের পক্ষে প্রত্যাহারপত্রটি জমা দেন তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিনহাজ উদ্দিন। প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আব্দুল লতিফ শেখ।

প্রত্যাহারপত্রে জানানো হয়, ‘আমি মো. লুত্ফুল হাবিব সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪-এ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করি।

কিন্তু ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে আমার নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এর আগে সকালে এক ভিডিও বার্তায় লুত্ফুল হাবিব রুবেল তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে কোনো মন্ত্রী, সংসদ সদস্যের আত্মীয়-স্বজন নির্বাচন করতে পারবেন না। তারই আলোকে এই ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’

দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় সংসদ সদস্য খান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধনের বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু এবং এমপির বাবার চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু রেজা খানসহ ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে দুজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আছেন তিনজন। মনোনয়নপত্র দাখিল করা প্রার্থীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

জানা গেছে, এমপির দুই স্বজন ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এরশাদুল হক টুলু, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রাজা ও বিএনপি সমর্থক তোফায়েল হোসেন লিটন চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পাঁচজন। তাঁদের একজন হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের শ্যালক মো. হামিদ লতিফ ভূইয়া ওরফে কামাল। তিনি উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের মনোহরপুর ভূঁইয়াবাড়ির বাসিন্দা। তবে তাঁর দলীয় কোনো পদের তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে গাজীপুরের শ্রীপুরে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গতকাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে চেয়ারম্যান পদে চারজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন জামিল হাসান দুর্জয়, অ্যাডভোকেট শামসুল আলম প্রধান, আব্দুল জলিল ও শাখাওয়াত হোসেন শামীম। চারজনই আওয়ামী লীগের নেতা। তাঁদের মধ্যে জামিল হাসান দুর্জয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই।

দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় কোনো ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। গতকাল এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বৈধ হলে এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে এই উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন তিনজনই। এই তিন প্রার্থীই কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারী।