দুর্নীতিকে শক্ত হাতে দমনে সরকারের স্পস্ট উদ্যোগ


hadayet প্রকাশের সময় : জুন ৯, ২০২৪, ৪:১৯ পূর্বাহ্ন / ১৫
দুর্নীতিকে শক্ত হাতে দমনে সরকারের স্পস্ট উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতি’র অভিযোগ ও ‘বিপুল পরিমাণ সম্পদ’ নিয়ে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। এরইমধ্যে অবৈধ উপায়ে অর্জিত তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানায়, কেবল বেনজীর নয়, সারা দেশেই অনেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। আবার অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে কারও কারও বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার চার্জশিটও দেওয়া হচ্ছে আদালতে।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগই বেশি।

পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরই বাংলাদেশের দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে। দেশের ভেতরে বিরোধী দল বিএনপি নিজেরা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হলেও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রশ্নে তারা মুখর। সবকিছু ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি নিয়ে যাঁরা কথা বলেন, তাঁদের অনেকে দুর্নীতিগ্রস্ত। দুর্নীতির কথা শুধু মুখে মুখে বললে হবে না। কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে, তার তথ্যও দিতে হবে। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দিলে সরকার ব্যবস্থাও নেবে।

এদফা ক্ষমতায় এসে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে যে কথা দেয়, সে কথা রাখে। যে প্রতিশ্রুতি দেয়, তা পালন করে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে বলেই জনগণ তার সুফলও পাচ্ছে। এদিকে সমাজ গবেষকরা বলছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ ও শাস্তি নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সরকারি কর্মচারী, রাজনীতিবিদ এসব ব্যক্তির পরিচয় এবং সামাজিক মর্যাদা উপেক্ষা করে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। আর এবিষয়ে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান আশাব্যন্জক।

এর আগে, ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহার প্রকাশ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা ঘোষণা করেছিলেন। মন্ত্রিসভা গঠনের পর তিনি মন্ত্রীদের দুর্নীতি সম্পর্কে সাবধান করেছিলেন। পরবর্তী সময় জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে দুর্নীতিবিরোধী সুনির্দিষ্ট চারটি বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন, যারা দুর্নীতিতে জড়িত, তাদের আত্ম শুদ্ধি চর্চা করতে হবে; আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে; তথ্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ করতে হবে এবংদুর্নীতি প্রতিরোধে জনগণের অংশগ্রহণ ও গণমাধ্যমের সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।

সেই পথেই গত কয়েক মাসে সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়ে “বিগফিশ”দের দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এমনকি পুলিশ প্রধান থেকে শুরু করে যাদেরই বিরুদ্ধে দুর্নীতের অভিযোগ এসেছে, তাদেরই বিচারের আওতায় আমার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থপাচার বন্ধ করতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ কঠোরভাবে কার্যকর করতে হবে। এ ছাড়া হুন্ডি বন্ধ করতে হবে এবং আমদানিতে কেউ যেন ওভার ইনভয়েসিং করতে না পারে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।

দুর্নীতি নিয়ে যখন নানা কথা হচ্ছে তখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতি কোনো দেশে হয় না, এ দাবি কেউ করতে পারে না। সরকারের প্রভাবশালী এই মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্নীতির মহোৎসব শুরু হয় বিএনপির আমলে। আমাদের সরকার প্রধান দুর্নীতি করেন বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন এমন অভিযোগ কেউ করতে পারবে না। তিনি সৎ জীবন যাপন করেন।’ মন্ত্রী বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করছে। তদন্ত-মামলা-গ্রেপ্তার—সবকিছুর একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে। সরকার এখানে দুদককে ডিঙিয়ে আগ বাড়িয়ে কেন ব্যবস্থা নেবে? সরকারের দুর্নীতি বিরোধী যেসব সংস্থা আছে তাদের কোনো ব্যর্থতা থাকলে তারও বিচার হবে।’

এদিকে দুদকের ব্যবস্থা নেওয়া না নেওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “কেউ দুদকে অভিযোগ না করলে কিংবা গণমাধ্যমে খবর না আসলে আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না কে কোন পদে বসে দুর্নীতি করছেন। সেটা জানা মাত্র আমরা নিজেদের প্রক্রিয়ায় এগুতে থাকি। আমরা এখন অনেক বড় মামলা নিয়ে কাজ করার ক্ষমতা রাখি। এবং কোথাও থেকে কোনো বাধা দেওয়ার ঘটনা নেই। এমনকি দুর্নীতি দমনে গত এক দশকে সারা বাংলাদেশে জনবল বেড়েছে।