শাবানা ১৯৯৭ সালেই অভিনয় থেকে অবসর নিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হয়েছেন। এরপর আর অভিনয়ে ফেরেননি। তবে চলচ্চিত্র প্রযোজনার পরিকল্পনা করেছিলেন। এর আগে শাবানা অনেকবারই গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রের কারণেই আজ তাঁর নাম, খ্যাতি, যশ হয়েছে। তাই অভিনয় থেকে বিদায় নিলেও চলচ্চিত্র প্রযোজনা করবেন। চলচ্চিত্রের প্রতি সেই শ্রদ্ধাবোধ থেকে এবারও চলচ্চিত্র প্রযোজনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন শাবানা ও তাঁর স্বামী ওয়াহিদ সাদিক। কিন্তু এই সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অসংখ্য মানুষ শাবানার সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে তাঁদের মত জানাচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকেই শাবানাকে বলছেন তিনি যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্র থেকে দূরে এবং ধর্ম–কর্ম ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত আছেন, তাই চলচ্চিত্রে তাঁর আর না ফেরাই উচিত। শাবানা তাঁর ভক্ত–অনুরাগীদের মতামতকে সম্মান জানিয়ে ও নিজের ইচ্ছায় এবার চলচ্চিত্র থেকে অবসরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন
চলতি মাসের ৭ তারিখেও স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের মাধ্যমে অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক শাবানা ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি আবার চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসছেন। কলকাতার সঙ্গে যৌথ আয়োজনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছিলেন ওয়াহিদ সাদিক। কিন্তু হঠাৎ করেই চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে একেবারে গুটিয়ে নেওয়া মানে চূড়ান্ত অবসরের ঘোষণা দিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী নির্মাতা শাবানা। ঢালিউডের এই বিউটি কুইন এখন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। ঢাকায় অবস্থানরত তাঁর স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের মাধ্যমে তিনি জানান, নিজেকে চলচ্চিত্র প্রযোজনা থেকে একেবারেই গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাবানা। ওয়াহিদ সাদিক বলেন, ‘শাবানা ১৯৯৭ সালেই অভিনয় থেকে অবসর নিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হয়েছেন। এরপর মাঝেমধ্যে দেশে এলেও বহু প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও আর অভিনয়ে ফেরেননি। তবে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার চলচ্চিত্র প্রযোজনার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু চলচ্চিত্রের ব্যবসা তখন একেবারেই অনুকূলে না থাকায় শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এর আগে শাবানা অনেকবারই গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রের কারণেই আজ তাঁর নাম, খ্যাতি, যশ হয়েছে। তাই অভিনয় থেকে বিদায় নিলেও চলচ্চিত্র প্রযোজনা করবেন। চলচ্চিত্রের প্রতি সেই শ্রদ্ধাবোধ থেকে এবারও চলচ্চিত্র প্রযোজনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন শাবানা ও তাঁর স্বামী ওয়াহিদ সাদিক। কিন্তু এই সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অসংখ্য মানুষ শাবানার সঙ্গে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে তাঁদের মত জানাচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকেই শাবানাকে বলছেন তিনি যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্র থেকে দূরে এবং ধর্ম-কর্ম ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত আছেন, তাই চলচ্চিত্রে তাঁর আর না ফেরাই উচিত। শাবানা তাঁর ভক্ত-অনুরাগীদের মতামতকে সম্মান জানিয়ে ও নিজের ইচ্ছায় এবার চলচ্চিত্র থেকে অবসরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। শাবানা আরও জানিয়েছেন, তাঁর ও তাঁর স্বামীর চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা এসএস [শাবানা-সাদিক] প্রোডাকশন আর খোলা হবে না এবং এই সংস্থা থেকে আর কোনো চলচ্চিত্রও নির্মাণ হবে না। বরং তাঁর স্বামী ওয়াহিদ সাদিকের নামে ডব্লিউএস [ওয়াহিদ সাদিক] প্রোডাকশন চালু করে তা থেকেই তাঁর স্বামী চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারেন। এদিকে, ওয়াহিদ সাদিক আবারও বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রাণ ফেরাতে আবার নির্মাণে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী অভিনেত্রী শাবানা ১৯৯৭ সালের দিকে চলচ্চিত্র জগৎ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হই। এরপর প্রায় প্রতি বছরই দেশে এলেও চলচ্চিত্রের ব্যবসা অনুকূলে না থাকায় আর নির্মাণে ফিরতে পারিনি। বর্তমানে ঢাকার চলচ্চিত্র ফের উজ্জীবিত হয়ে ওঠায় আমাদের চলচ্চিত্র জগৎকে চাঙা করার সহযোগিতা করতেই বিগ বাজেট ও অ্যারেঞ্জমেন্টে চলচ্চিত্র নির্মাণে আবারও ফিরছি। তিনি জানান, কলকাতার সঙ্গে যৌথ আয়োজনে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করবেন এবং এটি কলকাতার ছবির পরিচালক রাজীব কুমার বিশ্বাস নির্দেশনা দেবেন। আর বাংলাদেশ থেকে একজন নির্মাতা নেওয়ার জন্য অনেকের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। এই চলচ্চিত্রের গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন নির্মাতা রাজীব কুমার বিশ্বাস। ছবির গল্প প্রসঙ্গে ওয়াহিদ সাদিক বলেন, ছবিটি হবে যথারীতি পারিবারিক- অ্যাকশন ও রোমান্টিক গল্পের। ছবির নায়িকা হিসেবে কাজল বা বিদ্যা বালানকে নেওয়ার কথা ভাবলেও কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার শিডিউল না পাওয়ায় এখন বিদ্যা বা অন্য কাউকে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ওয়াহিদ সাদিক। তিনি বলেন অনেকেই সন্দেহ করছে শেষ পর্যন্ত ছবিটি নির্মাণ করব কি না? আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই সব চূড়ান্ত করতে হয়তো কিছুটা দেরি হতে পারে, কিন্তু ছবিটি নির্মাণ হবেই। ওয়াহিদ সাদিক বলেন, শুধু এই ছবিটি নয়, আরও কয়েকটি প্রজেক্ট নিয়ে আসছি। তিনি জানান, গল্পের কারণেই একজন বলিউডের বাঙালি নায়িকা প্রয়োজন এবং এই চরিত্রটি হবে একটু বয়স্ক। তাই এই দুই নায়িকার কথাই ভেবেছিলাম। তিনি আরও বলেন, ছবির সব কিছু চূড়ান্ত করতে শিগগিরই প্রথমে কলকাতা ও পরে মুম্বাই যাচ্ছি। তাঁর কথায়, ছবির নাম চূড়ান্ত করে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকায় ছবির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব। তিনি জানান ছবির শুটিং হবে বাংলাদেশ, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রে। দুই বাংলার শিল্পী-কলাকুশলীরা সমানভাবে এই ছবিতে অভিনয় করবেন। বিশ্বব্যাপী ছবিটি মুক্তি দেওয়া হবে বলেও জানান প্রযোজক ওয়াহিদ সাদিক। তিনি আরও জানান, তাঁর নতুন চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ‘ডব্লিউএস প্রোডাকশন’ নিয়মিত চলচ্চিত্র নির্মাণ করে যাবে। তবে এর জন্য প্রয়োজন দেশে সিনেমা হল ও সিনেপ্লেক্সের সংখ্যা বাড়ানো। কারণ দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে সিনেমা হল না থাকায় চলচ্চিত্র নির্মাণে লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত আনার নিশ্চয়তার অভাবে নির্মাতারা এখন চলচ্চিত্র নির্মাণে সাহস পান না। তিনি সিনেমা হল বৃদ্ধির জন্য সরকার ও সিনেমা হল মালিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। এর আগে শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিক তাঁদের চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা এসএস প্রোডাকশন প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৭৯ সালে। ওই বছর প্রথম ছবি নির্মাণ করেন ‘মাটির ঘর’। ছবিটি পরিচালনা করেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক প্রয়াত আজিজুর রহমান। আর এতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেন শাবানা ও রাজ্জাক। এরপর ছুটির ঘণ্টা, আমি সেই মেয়ে, স্বামী কেন আসামিসহ স্থানীয় ও যৌথ প্রযোজনায় প্রায় দুই ডজন ছবি নির্মাণ করা হয় এই প্রোডকাশন হাউস থেকে এবং সবই বাম্পার হিট ব্যবসা করে। এসএস প্রযোজিত সর্বশেষ ছবি ‘স্বামী কেন আসামি’। এটি মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে। শাবানা ও ওয়াহিদ সাদিকের ছবির মাধ্যমেই ঢাকার ছবিতে অভিনয় করেন বলিউড অভিনেত্রী জয়া প্রদা, অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডে, কলকাতার অভিনেতা-অভিনেত্রী রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা সেনসহ অনেকে।
আপনার মতামত লিখুন :