
অনেক দিনের ইচ্ছে ছিলো, একদিন নারায়ণগঞ্জ এর কিছু দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার। তো আমাদের প্ল্যান ছিলো নারায়ণগঞ্জ জেলার বাংলার তাজমহল, পানাম নগর ও লোক শিল্প জাদুঘর ঘুরার। আমরা যেতেহু বাজেট ট্যাভেলার ঐ হিসাবে হাজার টাকা নিয়ে রওনা হলাম আমরা তিন জন। আমাদের প্ল্যান ছিলো খুব সকালে রওনা হবো। আমি, তানভির ও হাসান ভাই একসাথে হয়ে ৭.৩০ দিকে এ উত্তরা দিয়ে রওনা হই। আমদের প্রথমে গন্তব্য ছিলো কুড়িল বিশ্বরোড ঐ খান থেকে বিআরটিসি বাসে ৬০ টাকা ভাড়ায় গাউছিয়া চলে যাই। গাউছিয়া থেকে অটোরিকশায় ৮০ টাকা ভাড়ায় তাজমহল এর সামনে। তাজমহল এর ভিতরে ২০০ টাকা টিকিট কেটে ভিতরে প্রবেশ করলাম। সকাল সকাল চলে আসছিলাম তাই মনে হইছিলো এটা আমাদের। এই তাজমহল মূলত (ভারতের আগ্রায় অবস্থিত একটি নিদর্শন) এর একটি হুবহু নকল বা অবিকল প্রতিরূপ। তো এখানে গিয়ে অনেকটাই মনে হবে আমি তাজমহল এর সামনে আছি। মূলত যাদের ভারত গিয়ে প্রকৃত নিদশর্ন দেখার সামর্থ নেই তারা এইটা দেখতে পারেন।
কিছু সময় তাজমহল ঘুরে তাদের আরেকটা স্পটে চলে যাই। তাজমহল থেকে হেটে ৩-৪ মিনিট দূরত্বে পিরামিড এর অবস্থান। এই পিরামিড মূলত মিসরের পিরামিডের প্রতিরূপ। এখানে কিছু সময় ঘুরাঘুরি করে চলে যাই আমাদের পরের স্পটে। পিরামিড থেকে বের হয়ে ২৫০ টাকা দিয়ে অটোরিকশা রিজার্ভ করে চলে যাই পানাম নগর এর সামনে।
পানাম নগর ভিতের প্রবেশ করতে হলে জনপ্রতি টিকিট লাগবে ২০ টাকা করে। পানাম নগর নারায়ণগঞ্জ জেলায় সোনারগাঁও অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শহর। পানাম নগর ভিতের পূরানো বাড়ি গুলো দেখে আশ্চর্য হলাম আমরা। এক সময় এখানে বাংলার স্বাধীন রাজা ঈসা খাঁর পদচারণা ছিলো এই নগরীতে। সুলতান আমল থেকে এখানে বিকাশিত ছিলো বাংলার সাংস্কৃতি। পানাম নগর বা পানাম সিটি থেকে বের হয়ে দুপুরের খাবার টা শেষ করলাম।

পানাম নগর থেকে ১০ টাকা করে ভাড়ায় অটোরিকশায় চলে গেলাম আমাদের শেষ স্পটে, লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। এখানে ৫০ টাকা টিকিট করে আমি প্রবেশ করি । এখানে জাদুঘরে দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন বাংলার প্রাচীন সুলতানদের ব্যবহৃত অস্ত্র শস্ত্র, তৈজসপত্র, পোশাক, বর্ম, অলংকার ইত্যাদি।বাংলার প্রাচীন ও মধ্য যুগের লোকশিল্পের অনেক নিদর্শন রয়েছে এখানে, রয়েছে বাংলার প্রাচীন মুদ্রা। কারুপল্লীতে বৈচিত্র্যময় দোচালা, চৌচালা ও উপজাতীয়দের আদলে তৈরি ঘরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অজানা, অচেনা, আর্থিকভাবে অবহেলিত অথচ দক্ষ কারুশিল্পীর তৈরি বাঁশ- বেত, কাঠ খোদাই, মাটি, জামদানি, নকশিকাঁথা, একতারা, পাট, শঙ্খ, মৃৎ শিল্প ও ঝিনুকের সামগ্রী ইত্যাদি কারুপণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এটি ১৯৭৫ সালে শিল্পচার্য জয়নুল আবেদীনের উদ্যেগে এটা প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখন বিদায় নেওয়ার পালা লোক শিল্প থেকে বের হয় মোগড়াপাড়া বাস স্টান থেকে ৬৫ টাকা বাস ভাড়ায় চলে আসি গুলিস্তান, ঐ খান থেকে আরেকটা বাসে রাত ৮ টায় উত্তরা এসে আমাদের এইবারের ট্যুর শেষ হয়।
হাতে ১ হাজার টাকা থাকলে আপনিও নারায়নগঞ্জ জেলায় দশর্নীয় স্থান গুলোতে ঘুরে আসতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :