আবারও সেই মেনেনডেজ, এবার অভিযোগ মিশরীয় এজেন্ট হিসেবে


bhawalnews প্রকাশের সময় : অক্টোবর ১৩, ২০২৩, ৩:৩৩ অপরাহ্ন / ৪৮
আবারও সেই মেনেনডেজ, এবার অভিযোগ মিশরীয় এজেন্ট হিসেবে

 

বিশেষ প্রতিনিধি

 

মিশর সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষের সিনেটর বব মেনেনডেজের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন ফেডারেল কোর্টে মেনেনডেজের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন ফেডারেল কৗঁসুলি। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অন্তত চারটি অভিযোগ উত্থাপিত হলো। আছে অনানুষ্ঠানিক আরও অনেক অভিযোগ। এমনকি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মার্কিন রূপকার হিসেবেও মেসেসডেজকে সন্দেহ করা হয়। র‌্যাবের বিরুদ্ধে আনা স্যাংশনের প্রস্তাব তার মাধ্যমেই এসেছিলো।

 

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবার বব মেনেনডেজকে ‘বিদেশি এজেন্ট নিবন্ধন আইন’ লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় যদি কেউ বিদেশি এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে চায় তাহলে তাকে সরকারিভাবে নিবন্ধন করতে হবে। কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে বিদেশি সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ না করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিল মেনেনডেজের ওপর। এছাড়া তার কোনও সরকারি নিবন্ধনও ছিল না।

 

অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের মে মাসে মেনেনডেজ, তার স্ত্রী এবং একজন ওয়ায়েল হানা নামে একজন ব্যবসায়িক সহযোগী  ওয়াশিংটনে মেনেনডেজের সিনেট অফিসে একজন মিশরীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেখানে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তারা একজন মার্কিন নাগরিকের বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। ওই মার্কিন নাগরিক ২০১৫ সালে মিশরের সামরিক বাহিনীর চালানো বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এই হামলার পর মার্কিন কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সদস্য মিশরকে সামরিক সহায়তা প্রদানে আপত্তি জানিয়েছিলেন। আর মিশরীয় সরকার আহত ওই আমেরিকানকে ন্যায্যভাবে ক্ষতিপূরণ দিতেও ইচ্ছুক ছিলেন না।

 

বৈঠকের পর ওই মিশরীয় কর্মকর্তা মেনেনডেজের ব্যবসায়িক সহযোগী হানাকে ম্যাসেজ করেন, ‘যদি মেনেনডেজ এই বিষয়টি সমাধানে সাহায্য করেন তাহলে তিনি স্বস্তি পাবেন’। তার ম্যাসেজের উত্তরে হানা লিখেছিলে, ‘মনে করুণ হয়ে গেছে’।

 

এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিনেটর বব মেনেনডেজ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে এই দম্পতি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

 

বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞারও কি রূপকার তিনি?

বব মেনেনডেজ নিউ জার্সির সিনেটর। নিজ অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্য থেকেই তার পদত্যাগের দাবি উঠে। এরপর আবারও প্রশ্ন ওঠে নতুন করে কংগ্রেসম্যান মেনেনডেজ কী বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কথা বলতেও ঘুষ নিয়েছিলেন? র‌্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা কংগ্রেসম্যান বব মেনেনডেজ একের পর এক নিজের গড়া ফাঁদে ধরা পড়ছেন। ঘুষ গ্রহণের বিষয়ে তদন্ত শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেনডেজ পদত্যাগ করেন। বব ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

 

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, অবমুক্ত করা ৩৯ পাতার অভিযোগে বলা হয়, মেনেনডেজের রাজনৈতিক অবস্থান ও ক্ষমতা তাকে এ ধরনের দুর্নীতিতে জড়াতে উৎসাহিত করেছে।

 

অভিযোগে বলা হয়েছে, মেনেনডেজ ও নাদিনে দম্পতি নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে নগদ অর্থ, সোনা, দামি গাড়ি ও একটি বাড়ির বন্ধক নিয়েছেন। কৌঁসুলিদের অভিযোগ, মেনেনডেজ ও তার স্ত্রী গোপনে প্রভাব খাটিয়ে মিশরীয় সরকারের সহায়তা পাইয়ে দিতে এবং তিন ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা দিতে ঘুষ নিয়েছিলেন। ওই তিন ব্যক্তি হলেন ওয়ায়েল হানা, জোসে উরিবে ও ফ্রেড ডাইবস।

 

মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের পদ ব্যবহার করে আরও সাত সহকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণায় নেমেছিলেন বব। সে সময়ের ট্রাম্প সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র কাছে বাংলাদেশে মানবাধিকার হরণের অভিযোগ তুলে নিষেধাজ্ঞার জন্য চিঠি দিয়েছিলেন তিনি।